Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ডাল বীজের গুণগত মান রক্ষণে করণীয়

বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারী উদ্যোগে ধান, গম, ভুট্টা, সবজি ও আলু বীজ মোটামুটিভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সরবরাহ হলেও ডাল ও তেলের বীজ সরবরাহ অত্যন্ত কম, প্রায় ৭% (বিএডিসি)। বলা যায় বাংলাদেশে এই ফসলগুলোর যে বীজ ব্যবহৃত হয় তার প্রায় সব বীজই কৃষকের বীজ। ভালো ফসল ফলাতে ভালো বীজের প্রয়োজন। সুতরাং ভালো বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ সম্পর্কে কৃষকের পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে এবং এর উৎপাদন ও সংরক্ষণ পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।


ভালো বীজ
ঝকঝকে, পরিপুষ্ট বীজ হলেই তাকে ভালো বীজ বলা যাবে না। ভালো বীজের নি¤œলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো অবশ্যই থাকতে হবে।
ভালো জাতের বিশুদ্ধ বীজ হতে হবে বীজ আকারে বড়, পুষ্ট ও সব বীজ প্রায় এক আকারের হবে। বীজ পোকা কাটা হবে না,  রোগাক্রান্ত হবে না, দাগযুক্ত হবে না ও উজ্জ্বল রঙের হবে। ভালো বীজে পানির পরিমাণ ১০% এর বেশি হবে না। বীজে অন্য ফসলের/জাতের বীজ, আগাছার বীজ, জড় পদার্থ, খড় কুটা বা ভাঙ্গা বীজ থাকবে না। সর্বোপরি সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যবান চারা গজানোর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হতে হবে।


দেশে ৪ ধাপে বীজ বর্ধন হয়ে থাকে, যথা মৌলবীজ (ব্রিডার বীজ), ভিত্তি বীজ, প্রত্যায়িত বীজ ও মানঘোষিত বীজ (ঞখঝ) এবং এগুলোর সাথে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জড়িত। এগুলোর মধ্যে মানঘোষিত বীজ এবং প্রত্যায়িত বীজ কৃষকের মাঝে ফসল ফলানোর জন্য অথবা আরও একবার বীজ তৈরি করার জন্য সরবরাহ হয়ে থাকে। তবে কৃষকগণ প্রত্যায়িত বীজ ও মানঘোষিত বীজ উৎপাদন করতে পারেন। এই সব বীজের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট মানদ- মেনে চলা হয়।


বীজের গুণগত মান রক্ষণে করণীয় : বীজের গুণগত মান অর্থাৎ  কৃষক পর্যায়ে বীজের মান রক্ষা করার জন্য বীজ ফসলে যে সমস্ত কাজ করার প্রয়োজন হয় সাধারণ ফসল চাষে সেগুলোর প্রয়োজন পড়ে না। বীজ মান বজায় রাখতে নি¤œলিখিত ধাপগুলো একটু বিস্তারিতভাবে জানা প্রয়োজন।
 

১) ভালো জাতের শনাক্তকরণ চিহ্ন জানা এবং বীজ সংগ্রহ : ভালো ফসল উৎপাদনের জন্য ভালো জাত নির্বাচন পূর্বশর্ত। সুতরাং ভালো বীজ উৎপাদনের জন্য উচ্চফলনশীল ভালো জাতের বিশুদ্ধ বীজ সংগ্রহ করতে হবে। বীজ উৎপাদনকালীন সময়ে জমি থেকে অন্য জাতের গাছের মিশ্রণ বাছাই (রগিং) করার জন্য অবশ্যই নির্বচিত জাতের এক বা একাধিক শনাক্তকরণ চিহ্ন জানা প্রয়োজন। তাই বিশ্বস্ত সূত্র থেকে বীজ সংগ্রহ করা উচিত।
 

২) মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন পদ্ধতি : বীজ উৎপাদন পদ্ধতিতে অনেকগুলো ধাপ জড়িত, যেমনÑ উপযুক্ত জমি নির্বাচন, সুষম সার প্রয়োগ, আগাম সময়ে বপন, লাইনে বপন, ফসলের পরিচর্যা (রোগ, পোকামাকড় ও আগাছা দমন), রগিং, ফসল কর্তন, মাড়াই, ইত্যাদি। প্রত্যেকটি পদক্ষেপই গুরুত্বপূর্ণ। তবে

নি¤œলিখিত কাজগুলোর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে-
জমি নির্বাচন : সেচ ও নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত উঁচু-মাঝারি উঁচু জমি দো-আঁশ-এঁটেলদোয়াঁশ মাটি মসুর ও মুগডালের জন্য উপযোগী। তবে স্মরণ রাখতে হবে যেন পূর্ববর্তী মৌসুমে ঐ জমিতে একই ফসলের চাষ না করা হয়ে থাকে। কারণ তাতে জমিতে অবাঞ্ছিত গাছ (ঠড়ষঁহঃববৎ ঢ়ষধহঃ) গজিয়ে বীজে মিশ্রণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


আগাম বপন : উপযুক্ত সময়ের শুরুতে বপন করলে বীজ পুষ্ট হওয়ার জন্য গাছ বেশি সময় পায় এবং রোগবালাইয়ের প্রভাবমুক্ত থাকে এবং শুষ্ক সময়ে ফসল কর্তন, মাড়াই ইত্যাদি সহজ হয় এবং বীজের গুণগত মান বজায় থাকে।


লাইনে বপন : যদিও ডাল ফসল উৎপাদনের জন্য লাইনে বপন অতি জরুরি নয় কিন্তু বীজ উৎপাদনের জন্য লাইনে বপন অত্যন্ত আবশ্যক। কারণ এতে গাছ পর্যবেক্ষণ ও বাছাই (রগিং), আগাছা দমন, ফসল পরিচর্যা অনেক সহজ হয় এবং এগুলোভালো বীজ উৎপাদনের জন্য বিশেষ প্রয়োজন।
রগিং : গাছের বৃদ্ধি থেকে শুরু করে কর্তন পর্যন্ত একাধিকবার গাছ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে অবাঞ্ছিত গাছ সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে, নতুবা কয়েকটি গাছই আপনার বীজে মিশ্রণের জন্য যথেষ্ট।


ফসলের পরিচর্যা : ফসল যাতে রোগমুক্ত, পোকামাকড়মুক্ত ও আগাছামুক্তভাবে উৎপাদন করা যায় সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ কতকগুলো রোগ আছে যা বীজবাহী (যেমন- মসুরের স্টেমফাইলিয়াম ব্লাইট)। পোকামাকড় বীজের গুণগতমান নষ্ট করে, ফলন কমে যায়। আবার আগাছা বীজ ও বীজের গুণগত মান নষ্ট করে পাশাপাশি ফলনও মারাত্মকভাবে কমিয়ে দেয়। তেমনি ফুল বা ফল ধরার সময় জমিতে পর্যাপ্ত রস না থাকলে ফুল ও ফল পড়ে যায়, দানা ঠিকমতো পুষ্ট হতে পারে না এবং বীজের গুণগত মান কমে যায় (বিশেষ করে মুগের ক্ষেত্রে)। সেজন্য বীজ ক্ষেতে সেচ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।


৩) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ : মাড়াই থেকে শুরু করে সংরক্ষণ পর্যন্ত কাজগুলোকে এককথায় প্রক্রিয়াজাতকরণ বলে। এখানে নিম্নলিখিত কাজগুলোর প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হতে হবে।


মাড়াই : থ্রেসিং ফ্লোরে একই ফসলের অন্য কোনো জাত আগে মাড়াই করে থাকলে তা সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করে নিতে হবে। অনুরূপভাবে একই থ্রেসারে ঐ ফসলের অন্য জাত মাড়াই করে থাকলে থ্রেসারটিও সম্পূর্ণভাবে বীজমুক্ত করতে হবে। এছাড়াও থ্রেসারে বীজ ভেঙে যাচ্ছে কি না সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
পরিষ্কার করা : মাড়াই এর পরে ঝেড়ে খড়কুটা, চিটা ও ছোট দানা আলাদা করার পর চালনি দ্বারা চেলে ছোট দানা ও আগাছা বীজ ফেলে দিতে হবে (গ্রেডিং করা)।


বীজ শুকানো : বীজের পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বীজ ভেজা হলে পোকামাকড় আক্রমণ করে, ছত্রাক জন্মায় এবং তাপ বেড়ে বীজ মরে যায়। সুতরাং বীজ ভালো রাখতে হলে বীজ কটকটে করে শুকাতে হবে (আর্দ্রতা ১০% এর নিচে আনতে হবে যেন দাঁতের নিচে কট করে বীজ ভেঙে যায়) তবে গ্রীষ্মকালে ভর দুপুরে প্রখর রৌদ্রে বীজ শুকানো ঠিক না। শুকানো বীজ ঠা-া করে পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। শুকানো বীজ এমন পাত্রে রাখতে হবে যাতে তা বাতাসের সংস্পর্শে না আসতে পারে, অর্থাৎ পাত্রটি অবশ্যই বায়ুরোধক হতে হবে।


গুদামজাতকরণ : বীজ ভালোভাবে শুকিয়ে বায়ুরোধী পাত্রে (যেমন-ধাতব বা প্লাস্টিক ড্রাম, পলিথিন লাইনিং বস্তা বা মটকা ইত্যাদি) সংরক্ষণ করতে হবে। বীজ ভালোভাবে শুকিয়ে বায়ুরোধী পাত্রে (যেমন-ধাতব বা প্লাস্টিক ড্রাম, পলিথিন লাইনিং বস্তা বা মটকা ইত্যাদি) সংরক্ষণ করতে হবে।
সংরক্ষিত বীজ মনিটরিং করা : সংরক্ষিত বীজ মাঝে মধ্যে (বিশেষ করে বর্ষাকালে) খুলে দেখতে হবে পোকামুক্ত আছে কি না। বীজের মধ্যে হাত দিয়ে দেখতে হবে গরম লাগে কি না। যদি এমন হয় তাহলে পুনরায় শুকিয়ে এবং পোকা থাকলে প্রয়োজনে ওষুধ দিয়ে পোকা মেরে সংরক্ষণ করতে হবে।


অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা নির্ণয় করা : বীজ বপন বা বিক্রয়ের আগে বীজের গজানোর ক্ষমতা পরীক্ষা করা উচিত। এ জন্য ৪০০টি বিশুদ্ধ বীজ নিতে হবে এবং ৪টি থালায় বালু বা চোষ কাগজ (টিস্যু পেপার) এর উপর ১০০টি করে বীজ লাগিয়ে দিয়ে ভিজিয়ে ঘরে রেখে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন পানি না শুকিয়ে যায়। ডালের জন্য সাধারণত ৮ দিন পর চারা গণনা করে গজানোর ক্ষমতা নির্ণয় করা হয়। মনে রাখতে হবে যে, শুধু বীজের মুখ ফাটলেই চারা বের হয়েছে বলে ধরা যাবে না। প্রতিটা থালা থেকে সুস্থ চারা, বিকলাঙ্গ চারা, অগজানো ডাল বীজ, মৃত বীজ এবং শক্ত বীজ আলাদা করে গণনা করতে হবে। মৃত বীজ হলে আঙুলের চাপে গলে পচা গন্ধ পাওয়া যাবে। এভাবে গণনা করে ৪টি থালা থেকে প্রাপ্ত সুস্থ চারার গড় হারকে গজনোর ক্ষমতা বলা হয়।

 

মো: ওমর আলী

প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ডাল গবেষণা উপ-কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, জয়দেবপুর, গাজীপুর। মোবাইল : ০১৭১২৫৪৩৭২০ ই-মেইল : omaralipre@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon